সূরা আন-নাজম (আরবি ভাষায়: النّجْم) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৫৩ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ৬২ এবং রূকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ৩। সূরা আন-নাজম মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে।
.
নামকরণএই সূরাটির প্রথম শব্দ وَالنَّجْمِ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরাটি النّجْم (‘নাজম’) শব্দটি দ্বারা শুরু হয়েছে এটি সেই সূরা।
.
শানে নুযূল
নাযিল হওয়ার সময়-কাল সম্পর্কে এ বিস্তারিত আলোচনা থেকে কিরূপ পরিস্থিতিতে এ সূরাটি নাযিল হয়েছিল তা জানা যায়। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবুওয়াত লাভের শুরু থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত শুধু ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং বিশেষ বিশেষ বৈঠকেই আল্লাহর বাণী শুনিয়ে মানুষকে আল্লাহর দীনের দিকে আহবান জানিয়ে আসছিলেন। এ সুদীর্ঘ সময়ে তিনি কখনো কোন জনসমাবেশে কুরআন শোনানোর সুযোগ পাননি। কাফেরদের চরম বিরোধীতাই ছিল এ প্রধান অন্তরায়। তাঁর ব্যক্তিত্ব ও প্রচারণমূলক তৎপরতায় কিরূপ প্রচণ্ড আকর্ষণ এবং কুরআন মজীদের আয়াতসমূহে কি সাংঘাতিক প্রভাব আছে তারা খুব ভাল করেই জানতো। তাই তাদের চেষ্টা ছিল তারা নিজেরাও এ বাণী শুনবে না, অন্য কাউকেও শুনতে দিবে না এবং তাঁর বিরুদ্ধে নানা রকমের ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি করে শুধু নিজেদের মিথ্যা প্রচার প্রোপাগাণ্ডা জোরে তাঁর এ আন্দোলনকে দমিয়ে দেবে। এ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একদিকে তারা বিভিন্ন স্থানে একথা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছিলো যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিভ্রান্ত ও বিপথগামী হয়েছেন এবং লোকদেরকে পথভ্রষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছিল। অপরদিকে তাদের স্থায়ী কর্মপন্থা ছিল এই যে, নবী (সা) যেখানেই কুরআন শোনানোর চেষ্টা করতেন সেখানেই হট্টগোল, চিৎকার হৈ হল্লা শুরু করিয়ে দিতে হবে যাতে যে কারণে তাঁকে পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত লোক বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে জানতে তা যেন লোকে আদৌ জানতে না পারে। এ পরিস্থিতিতে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন পবিত্র হারাম শরীফের মধ্যে কুরাইশদের একটি বড় সমাবেশে হঠাৎ বক্তৃতা করতে দাঁড়ালেন। সূরা নাজম আকারে এখন যে সূরাটি আমাদের সামনে বর্তমান, আল্লাহর পক্ষ থেকে রসূলের (সা) মুখে তা বক্তৃতা আকারে পরিবেশিত হলো। এ বাণীর প্রচণ্ড প্রভাবে অবস্থা দাঁড়ালো এই যে, তিনি তা শুনাতে আরম্ভ করলে এর বিরুদ্ধে বিরেধীদের হট্টগোল ও হৈ -হল্লা করার খেয়ালই হলো না। আর শেষের দিকে তিনি যখন সিজদা করলেন তখন তারাও সিজদা করলো। পরে তারা এই ভেবে অত্যন্ত বিচলিত বোধ করলো যে, আমরা একি দুর্বলতা দেখিয়ে ফেললাম। এজন্য লোকজনও তাদেরকে এ বলে তিরস্কার করলো যে, এরা অন্যদের এ বাণী শুনতে নিষেধ করে ঠিকই কিন্তু আজ তারা কান পেতে তা শুধু শুনলো না, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সিজদাও করে বসলো। অবশেষে তারা এ মর্মে মিথ্যা অপবাদ রটায় যে, আরে মিয়া, আমরা তো () কথাটির পর মুহাম্মাদ (সা) মুখ থেকে ——–( এরা সব উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন দেবী। তাদের শাফায়াতের আশা অবশ্যই করা যায়) কথাটি শুনেছিলাম। তাই আমরা মনে করেছিলাম যে, মুহাম্মাদ (সা) আমাদের পথে ফিরে এসেছে। অথচ তারা যে কথাটি শুনতে পেয়েছে বলে দাবী করেছিলো, এ সমগ্র সূরাটির পূর্বাপর প্রেক্ষিতের মধ্যে তা কোথাও খাটে না। এ ধরনের একটি উদ্ভট বাক্যের সাথে এ সূরার মিল খুঁজে পাওয়া একমাত্র কোন পাগলের পক্ষেই সম্ভব। (বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন তাফহীমূল কুরআন, আল -হাজ্জ, টীকা -৯৬ থেকে ১০১) ।
.
অর্থসহ কোরান তেলাওয়াত
Quran Recite with Bengali Translation
Islamic Foundation Bangladesh
.
#Islam #Quran #An-Najm #আন-নাজম #IslamicFoundation #Recite #Bengali #bangla